মানবজীবনে সালাত বা নামাযের ভূমিকা-পর্বঃ০২

মানবজীবনে সালাত বা নামাযের ভূমিকা-পর্বঃ০২

জামাতে সালাত আদায়

কুরআন ও সুন্নায় সালাত আদায়ের যে তাকিদ এবং ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে, তা থেকে এ কথা পরিস্ফুট হয় যে, ফরয সালাত জামাতে পড়া অত্যবশ্যক। ইসলামী সমাজে জামাত ছাড়া ফরয সালাত পড়ার কোনো ধারণাই করা যেতে পারে না। অবশ্য যদি প্রকৃত ওযর থাকে তাহলে ভিন্ন কথা। সালাত আদায় নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা রুকু করে তোমরা তাদের সাথে রুকু করো।' (বাকারা, ২ : ৪৩) মুফাসসিরগণ আয়াত থেকে প্রমাণ করেছেন যে, সালাত জামাতের সাথে আদায় করা জরুরি কারণ আল্লাহ তায়ালা রুকুকারীদের সাথে রুকু করতে বলেছেন যা জমায়াতে সালাত আদায়ের মাধ্যমে সম্ভব। জামাতে সালাত আদায়ের ব্যাপারে রাসূলাল্লাহ খুবই তাকিদ প্রদান করতেন। একদিন তিনি মসজিদে আগমন করে মুসল্লিদের স্বল্পতা দেখে বললেন, আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি লোকদের জন্য কাউকে ইমাম নিযুক্ত করে বেরিয়ে যাই। অতঃপর যে জামাতে সালাত আদায় না করে বাড়িতে অবস্থান করছে সেই বাড়ি জ্বালিয়ে দেই। তখন প্রখ্যাত অন্ধ সাহাবী হযরত উম্মে মাকতুম " বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমার বাড়ি ও মসজিদের মধ্যে খেজুর ও বিভিন্ন বৃক্ষের বাগান রয়েছে। আর সব সময় আমি এমন কাউকেও পাই না যে আমাকে পথ দেখিয়ে মসজিদে নিয়ে আসবে। আমাকে কি বাড়িতে সালাত আদায়ের সুযোগ দেওয়া যায়? তিনি বললেন, তুমি কি ইক্বামত শুনতে পাও? সে বললো, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ তাহলে জামাতে এসো'। (মুসনাদে আহমাদ: ১৪৯৪৪ ) বললেন, জামাতে সালাত আদায়ে গুরুত্বারোপ করে রাসূলুল্লাহ শুধু বলেন, একা সালাত আদায় করার তুলনায় জামাতে সালাত আদায় করলে সাতাশ গুণ অধিক সওয়াব পাওয়া যায় । রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনে জামাত ত্যাগ করেননি। জামাত ছাড়া সালাত আদায় অপকারিতা সম্পর্কে নবী করিম বলেন, তোমরা যদি জামাত ছেড়ে ঘরে সালাত আদায় করো, তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নত ছেড়ে দিলে। যদি তোমরা আমার সুন্নত ছেড়ে দাও, তাহলে হিদায়াতের পথ ছেড়ে তোমরা বিচ্যুত হয়ে পড়বে।

 মানবজীবনে সালাত বা নামাযের ভূমিকা-পর্বঃ০২

তাকবিরে উলার গুরুত্ব

জামাতে ইমাম সাহেব প্রথম তাকবির দিয়ে যে সালাত শুরু করেন তাকে তাকবিরে উলা বলা হয়। তাকবিরে উলায় শরিক হয়ে সালাত আদায়ের ফযীলত অনেক । রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন- ‘যে ব্যক্তি চল্লিশ দিন প্রত্যেক সালাত নিয়মিতভাবে জামাতের সাথে এমনভাবে আদায় করবে যে, তার প্রথম তাকবির ছুটে যাবে না, তার জন্য জাহান্নামের আগুন ও মুনাফিকী থেকে অব্যাহতি এবং হিফাযতের ফায়সালা করা হয় ।' (তিরমিযি : ২২৪)

জুমার সালাত

শব্দটি আরবী, এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। যেহেতু সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন তথা জুমাবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন- মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সাথে সে দিনের যোহরের সালাতের পরিবর্তে জুমার সালাত আদায় করে, সে জন্য ঐ সালাতকে জুমার সালাত বলে অভিহিত করা হয়েছে। জুমার দিন একটি বরকত পূর্ণ দিন। আল্লাহ তায়ালা এ দিনটিকে সমস্ত দিনের উপর মর্যাদা দিয়েছেন এবং উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এ দিনটিকে নেয়ামত স্বরূপ নির্বাচন করেছেন। পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এ দিনে আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য ঘটনার জন্ম দিয়েছেন এবং পৃথিবীতে অনেক কিছুই এ দিবসটিতে সংঘটিত হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের ন্যায় জুমার সালাতও ফরয বলে কুরআনে ঘোষিত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন সালাতের জন্য তোমাদের আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর।' (জুমা, ৬২ : ৯) জুমার সালাতের গুরুত্ব বর্ণনা করে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন- ‘যে ব্যক্তি ভালোভাবে ওযু করে জুমার সালাত আদায় করতে আসে এবং ইমামের নিকটবর্তী হয়ে মনোযোগসহকারে খুতবা শুনে তার এ জুমা হতে পরবর্তী জুমা এবং আরো তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।' (মুসলিম : ১৪১৯, ইবনে মাজাহ : ১০৮০) জুমার সালাত ফরয হওয়ার শর্তাবলি ১. মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক ও বোধসম্পন্ন হওয়া ২. সুস্থ হওয়া ৩. মুকিম হওয়া ৪. পুরুষ হওয়া ৫. স্বাধীন বা আযাদ হওয়া ৬. সম্পূর্ণ বাধামুক্ত হওয়া। যেমন শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা, মুমূর্ষু রোগীর সেবায় নিয়োজিত থাকা এবং মুষলধারে বৃষ্টি হওয়া । তারাবীর সালাত তারাবীহ আরবী শব্দ, এর অর্থ বসা, বিশ্রাম করা, আরাম করা। রমযানে এশার সালাত আদায় করার পর অতিরিক্ত যে সুন্নত সালাত আদ্বায় করা হয় তাকে তারাবীর সালাত বলা হয়। তারাবীহ সালাত প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)বলেন- ‘আল্লাহ তায়ালা মাহে রমযানের সিয়াম ফরয করেছেন এবং রাতের বেলায় দাঁড়িয়ে তারাবীহ সালাত আদায় করাকে বিধান করে দিয়েছেন।' (বায়হাকী : ৩৪৫৫) তিনি আরো বলেন- ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও ইয়াকীনের সাথে রমযানের রাতে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করবে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।' (নাসাঈ ২১৭৩) তারাবীহ সালাত স্বয়ং রাসূলুল্লাহ এবং সাহাবায়ে কেরামগণ আদায় করেছেন। অত্রএব গুরুত্বপূর্ণ এ সালাত জামাতের সাথে আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর। এটি ৮ থেকে যত রাকাত ইচ্ছে আদায় করা যায় ।

তাহাজ্জুদ সালাত

তাহাজ্জুদ আরবী শব্দ, এর অর্থ রাত জাগা, ঘুম থেকে ওঠা। প্রত্যেহ রাতের ঘুম থেকে উঠে যে নফল সালাত পড়া হয় তাকে তাহাজ্জুদ সালাত বলা হয়। এই সালাতের অপর নাম সালাতুল লাইল বা কিয়ামুল লাইল । তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা সুন্নত। রাসূলুল্লাহ নিয়মিত এ সালাত আদায় করতেন এবং সাহাবায়ে কিরামকে তা পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। রাতে সালাত আদায়ের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আর রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ পড়তে থাকুন। এটা আপনার জন্য অতিরিক্ত কর্তব্য। আশা করা যায় আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে। (বনী ইসরাঈল, ১৭ : ৭৯) তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করা মুত্তাকীগণের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তারা রাতের অতি অল্প অংশ অতিবাহিত করতো নিদ্রায় এবং শেষ রাতে ইস্তিগফার করতো।' (যারিয়াত, ৫১ : ১৮) কুরআন হাদীসে তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের জন্য বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। এটি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের বিশেষ মাধ্যম। তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের উত্তম সময় হলো এশার সালাত আদায়ের পর কিছু সময় ঘুমিয়ে অর্ধ রাতের পর শেষ রাত্রে ঘুম থেকে উঠে সালাতে দাঁড়ানো। তাহাজ্জুদের সালাত নিম্নে দুই রাকাত এবং ঊর্ধ্বে বারো রাকাত ।

কসর

কসর শব্দটি আরবী, এর আভিধানিক অর্থ কম করা, সংক্ষিপ্ত করা । পরিভাষায় কোনো ব্যক্তি ৪৮ মাইল বা ততধিক দূরত্বের সফরে বের হলে সে মুসাফির বলে গণ্য হবে। মুসাফিরকে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয সালাত সংক্ষেপ করে দুই রাকাত আদায় করতে হয়, এটাই কসর। তবে সফরে যেয়ে ১৫ দিন বা এর অধিক অবস্থান করার নিয়ত করলে কসর থাকবে না। চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয সালাত সংক্ষেপ করে আদায় করতে সালাত যিনি ফরয করে দিয়েছেন সে আল্লাহ তায়ালা সালাত সংক্ষিপ্ত করে আদায় করার সুযোগ করে দিয়ে বলেছেন- ‘তোমরা যখন দেশ-বিদেশে সফর করবে তখন যদি বিশেষ করে তোমাদের আশঙ্কা হয় যে, কাফিরগণ তোমাদের জন্য ফিতনা সৃষ্টি করবে, তবে সালাত সংক্ষিপ্ত করলে তোমাদের কোনো দোষ নাই।' (নিসা, ৪: ১০১ ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সফরে থাকা অবস্থায় সালাতে কসর করতেন। তাঁর খাদেম হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) বর্ণনা করেন- আমরা নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সঙ্গে মদীনা থেকে মক্কাভিমুখে রওনা হয়েছিলাম। তিনি ফরয সালাত দুই রাকাত আদায় করলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা মদীনায় ফিরে এলাম। হযরত আনাস (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) কে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনারা কি সেখানে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন? তিনি প্রত্যুত্তরে বললেন, আমরা দশ দিন অবস্থান করেছিলাম।' (বুখারী : ১০১৯) সফর দ্রুতগতির হলে কিংবা যানবাহনে সালাতের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে যোহর ও আসরের সালাত এবং মাগরিব ও এশার সালাত একত্রে আদায় করা যাবে। একত্রে সালাত আদায় প্রসঙ্গে হাদীসে এসেছে- 'নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্রুত সফর করতেন, তখন মাগরিব ও এশা একত্রে আদায় করতেন।' (বুখারী : ১০৪১) মুসাফির অবস্থায় নফল সালাত আদায় বাধ্যতামূলক নয়। রাসূলুল্লাহ সহ খোলাফায়ে রাশেদীন আবু বকর, ওমর ও উসমান নফল সালাত কম আদায় করতেন। ইবনে ওমর আমি এর সাথে সফর করেন এবং তিনি বলেন- সফর অবস্থায় একবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আমি নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্যে থেকেছি, সফরে তাঁকে নফল সালাত আদায় করতে দেখিনি।' (বুখারী : ১০৩৭ )

কসরের নিয়মাবলি

১. কেবলমাত্র চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয সালাতে কসরের বিধান রয়েছে। যেমন যোহর, আসর ও এশার সালাত চার রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত আদায় করে কসর করতে হবে। ফজর ও মাগরিব সালাতের কসর নেই । ২. মুসাফির ব্যক্তি সালাতে জামাতের ইমামতি করলে আগেই মুক্তাদীদের জানিয়ে দেবেন এবং ইমাম দুই রাকাত সালাত শেষে সালাম ফিরালে মুক্তাদিরা উঠে বাকি সালাত শেষ করবেন। মুসাফির মুকীম ইমামের পেছনে জামাতে সালাত আদায় করলে ইমামের অনুসরণে পূর্ণ চার রাকাতই আদায় করতে হবে। ৩. মুসাফির থাকাবস্থায় কোনো সালাত কাযা হলে মুকীম অবস্থায় আদায়কালে তা কসরই করতে হবে। ৪. নিয়ত ছাড়া ১৫ দিনের বেশি অবস্থান করলে তাকে কসরই করতে হবে। ১৫ দিনের অধিক অবস্থানের নিয়ত করলে তাকে মুকিম বলে ও পুরো সালাতই তাকে আদায় করতে হবে। ৫. ৪৮ মাইল যেতে যে যানবাহনই ব্যবহার করুক না কেন তাকে কসর করতে হবে। ৬. চার রাকাত বিশিষ্ট সালাত দুই রাকাত করার কারণে সাওয়াব কমানো হবে না কারণ কসরের দুই রাকাতই পরিপূর্ণ সালাত । ভ্রমণকালে কষ্টের কারণে মুসাফিরের সালাত কমিয়ে সহজ করে দেওয়া বান্দার জন্য তায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ। তাই আল্লাহর বিধি-বিধান পালনের মাধ্যমে তাঁর শুকরিয়া আদায় করা আমাদের কর্তব্য।

যানবাহনে সালাত আদায়

সময়মত সালাত আদায় করা সালাতের আহকামগুলোর একটি। সময়মত সালাত আদায় না করলে ব্যক্তি গুনাহগার হয়। যানবাহনে সফররত অবস্থায় ব্যক্তি কিভাবে সালাত আদায় করবে তা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রদর্শিত জীবন ব্যবস্থাতেই ইসলামী শরীয়ার হুকুম- - আহকাম ও মানব জীবনের চলার পথে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিভিন্ন প্রাণীর বাহনে চড়ে সফর করতেন এবং সে বাহমের উপরেই সালাত আদায় করতেন। হযরত আমির (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘ইবনে ওমর (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) " তাঁর সওয়ারীর উপর (নফল) সালাত আদায় করতেন এবং এর উপর বিতরও আদায় করতেন। তিনি বর্ণনা করেন যে, নবী করিম * এরূপ করতেন। (বুখারী : ১০৩২) পূর্বে সফরের জন্য যানবাহন ছিল পশু তথা ঘোড়া, উট, গাধা ইত্যাদি। বর্তমানে সে স্থানে বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও উড়োজাহাজ প্রভৃতি। সফরের সময় সাওয়ারী যেদিকেই ফিরত রাসূলুল্লাহ সেদিকে ফিরেই নফল সালাত আদায় করতেন। হযরত আমির (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন— ‘আমি নবী করিম কে দেখেছি তাঁর সাওয়ারী যেদিকেই ফিরেছে তিনি সে দিকেই ফিরে সালাত আদায় করতেন।' (বুখারী : ১০৩০) যানবাহনের উপর যেদিকে মুখ করে থাকবে সেদিকে মুখ করেই সালাত আদায় করা যাবে, কেননা সকল দিকই আল্লাহ তায়ালার দিক। আল্লাহ তায়ালা আল-কুরআনে বলেন- ‘পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই; এবং যেদিকেই তোমরা মুখ ফিরাও না কেন, সেদিকই আল্লাহর দিক। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বব্যাপী, সর্বজ্ঞ।' (বাকারা, ২ : ১১৫) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাওয়ারীর পিঠে চড়ে নফল সালাতই বেশি আদায় করতেন । আর ফরয সালাত আদায়ের ক্ষেত্রে যেহেতু জামাতে সালাত আদায় করা সম্ভব হতো না তাই তিনি সাওয়ারী থেকে নেমে কিবলামুখী হয়ে সালাত আদায় করতেন। জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- ‘নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাওয়ারীর উপর থাকা অবস্থায় পূর্ব দিকে ফিরেও সালাত আদায় করেছেন। কিন্তু যখন তিনি ফরয সালাত আদায় করার ইচ্ছা করতেন তখন তিনি সাওয়ারী থেকে নেমে যেতেন এবং কিবলামুখী হতেন।' (বুখারী : ১০৩৫, মুসনাদে আহমাদ : ১৩৭৫৪ ) রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেহেতু সাওয়ারীর পিঠে চড়ে সালাত আদায় করেছেন, তাই নির্দিষ্ট সময়ে আদায়ের প্রয়োজনে যানবাহনে সালাত আদায় করা যাবে । সালাত ছেড়ে দেওয়া কিংবা কাযা করার কোনো অবকাশ নেই। আর যদি যানবাহন থামিয়ে জামাতে সালাত আদায়ের সুযোগ থাকে তাহলে জামাতে সালাত আদায় করতে হবে।

অসুস্থ ব্যক্তির সালাত

সালাত সর্বাবস্থায় সকলের জন্য ফরয, তাই কেউ অসুস্থ হলে তাকেও সালাত আদায় করতে হবে। অসুস্থতার কারণে যথাযথভাবে সালাত আদায় করতে না পারলে তাহলে যেভাবে সম্ভব সালাত আদায় করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিরাপদ হবে তখন সালাত কায়েম করবে। (নিসা, ২ : ১০৩ অসুস্থ ব্যক্তির সালাত সম্পর্কে একদিন রাসূলুল্লাহ কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন- ‘দাঁড়িয়ে সালাত পড়, যদি তা না পার তবে বসে সালাত পড়; আর তা যদি না পার, তবে কাত হয়ে শুয়ে শুয়ে সালাত পড়।' (বুখারী : ১০৫০)

কাযা সালাত

ফরয বা ওয়াজিব সালাত নির্ধারিত সময়ে আদায় না করে সময় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আদায় করলে তাকে কাযা সালাত বলে। কাযা সালাত আদায় শরীয়াতে অনুমতি থাকলেও ইচ্ছাকৃতভাবে সালাত কাযা করা কবীরাহ গুনাহ । নিম্নে কাযা সালাত আদায় করার পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো- ১. ফরয সালাতের কাযা ফরয। ২. মানত করা সালাতের কাযাও ওয়াজিব । ৩. সালাত আরম্ভ করার পর তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। কারণবশত নফল সালাত নষ্ট হয়ে গেলে বা শুরু করার পর ছেড়ে দিলে তার কাযা আদায় করা হানাফী মতে ওয়াজিব হয়ে যায় । ৪. সুন্নতে মুয়াক্কাদা ও নফল সালাতের কোনো কাযা নেই। তবে ফজর সালাতের সুন্নত এ থেকে ভিন্ন । ৫. যোহর সালাতের ফরযের পূর্বের চার রাকাত সুন্নত কোনো কারণবশত পড়া না হলে ফরযের পর পড়ে নেওয়া যায় । ৬. ওমরী কাযা বলতে কোনো কাযা হাদীসে নেই বরং অগণিত কাযার জন্য তওবা করতে হবে।

জানাযার সালাত

জানাযা সালাত ফরযে কিফায়া। জানাযা একটি বিশেষ প্রার্থনা যা কোনো মৃত মুসলমানকে কবর দেয়ার পূর্বে অনুষ্ঠিত হয়। এ সালাত হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার দরবারে মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করা। আত্মীয়-পরিজনসহ এলাকাবাসী সমবেত হয়ে তার জন্য দোয়া করলে আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। জানাযার সালাতে বেশি লোক হওয়া ভালো, তবে লোক সমাগমের জন্য জানাযা বিলম্ব করে পড়া অনুচিত। জানাযা সালাত অন্য সালাত হতে একটু ভিন্ন। কারণ জানাযা সালাতে কোনো আযান, ইকামত, রুকু ও সিজদা নেই । জানাযার সালাতে ফরয দুটি: চারবার আল্লাহু আকবার বলা ও দাঁড়ানো । জানাযা সালাতের সুন্নত তিনটি: আল্লাহর হামদ ও সানা পড়া, নবী করিম ক এর উপর দরূদ পড়া ও মৃতব্যক্তির জন্য দোয়া করা । জানাযা সালাত পড়ার জন্য অন্যূন তিন কাতার করা সুন্নত। বেশি হলে কাতার বিজোড় হওয়া উচিত। মৃতকে কিবলার দিকে সম্মুখে রেখে বক্ষ বরাবর ইমামকে দাঁড়াতে হয়। নিয়ত করে প্রথম তাকবির বলে সানা ও ফাতিহা দ্বিতীয় তাকবির বলে দুরূদ শরিফ, তৃতীয় তাকবির বলে দোয়া পাঠ করতে হয়। চতুর্থ তাকবির বলে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে জানাযা সালাত আদায় করতে হয়। জানাযা সালাতে তৃতীয় তাকবির বলে যে দোয়া করতে হয় তা হলো- ‘হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত, আমাদের ছোট ও বড়, আমাদের মধ্যে পুরুষ ও নারী, উপস্থিত ও অনুপস্থিত সকলের গুনাহ ক্ষমা করে দাও । হে আল্লাহ তুমি যাদেরকে জীবিত রেখেছ তাদেরকে ঈমানের উপর জীবিত রাখো। তুমি যাদেরকে মৃত্যু দাও তাদের ইসলামের উপর মৃত্যু দাও। আমাদের কাউকেই তোমার রহমত থেকে বঞ্চিত করো না। (আবু দাউদ : ২৭৮৬)

ঈদের সালাত

শব্দটি আরবী, এর অর্থ আনন্দ, খুশি, আমোদ ও উৎসব। এই বিশেষ দিন বছরে দুইবার ফিরে আসে। একটি ‘ঈদুল ফিতর' অন্যটি 'ঈদুল আযহা'। ঈদের দিন বিশ্ব মুসলিম পরস্পর হিংসা বিদ্বেষ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদগাহে গিয়ে বড়-ছোট, ধনী-গরিব একই কাতারে দাঁড়িয়ে এই বিশেষ ইবাদত করে থাকে। রমযান মাসের শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখে সে মাসের প্রথম দিন এবং জিলহজ মাসের দশ তারিখে মুসলিম মিল্লাত সমবেত হয়ে যে দুই রাকাত সালাত আদায় করে তাই ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সালাত । এ দুই রাকাত সালাত আদায় করা ওয়াজিব । ঈদুল ফিতরের সুন্নত কাজসমূহ ১. খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা ২. গোসল করা ৩. মিসওয়াক করা ৪. সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন ও পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা ৫. আতর ব্যবহার করা ৬. সালাতের পূর্বে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ৭. ঈদুল ফিতর সালাতের পূর্বে কিছু মিষ্টান্ন খাওয়া ৮. তিন, পাঁচ বা বেজোড় সংখ্যক খেজুর বা খুরমা খাওয়া ৯. এলাকার মসজিদে গিয়ে ফজরের সালাত আদায় করা ১০. ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া ১১. এক পথে দিয়ে যাওয়া এবং অন্য পথে দিয়ে ফিরে আসা ১২. সকাল সকাল ঈদগাহে গিয়ে ঈদের সালাত আদায় করা ১৩. তাকবিরে তাশরিক অর্থাৎ পড়তে পড়তে ঈদগাহে যাওয়া । ঈদুল আযহার দিনের সুন্নত কাজসমূহ: ১. উচ্চৈঃস্বরে তাকবিরে তাশরিক পাঠ করা ২. দুপুর পর্যন্ত অন্য কোনো খাদ্য-খাবার গ্রহণ না করে কুরবানি গোশত দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করা ৩. ঈদের সালাত তাড়াতাড়ি পড়ে কুরবানি করা ৪. সক্ষম ব্যক্তিদের কুরবানি দেওয়া ৫. ঈদুল আযহার পূর্বে ৯ জিলহজ হতে ১৩ জিলহজ পর্যন্ত প্রত্যেক ফরয সালাত পড়ার পর উচ্চৈঃস্বরে তাকবিরে তাশরিক অর্থাৎ পড়া

কুরবানি

কুরবানি শব্দের অর্থ ত্যাগ, উৎসর্গ, নৈকট্য অর্জন করা ইত্যাদি। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পশু যবেহ করাকে কুরবানি বলা হয়। কুরবানির তাৎপর্য হলো ত্যাগ, তিতিক্ষা ও প্রিয়বস্তু আল্লাহর সন্তুটির জন্য উৎসর্গ করা। মানবজাতির পিতা হযরত আদম এর সময় থেকেই এই কুরবানি চালু হয়ে এসেছে। হযরত আদম এর সন্তান হাবিল ও কাবিলের মধ্যে বিবাদ মীমাংসার জন্য তিনি তাদেরকে আল্লাহপাকের দরবারে কুরবানি পেশ করতে বলেছিলেন। সে সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- “আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত আপনি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনান, যখন তারা উভয়ে কুরবানি করেছিল তখন একজনের কুরবানি কবুল হলো এবং অন্যজনের কবুল হলো না'। (মায়িদা, ৫ : ২৭) এ কুরবানি যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে সমস্ত শরীয়াতেই বিদ্যমান ছিল। মূলত বর্তমানে প্রচলিত কুরবানি মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম ও তাঁর পুত্র হযরত ইসমাঈল এর অপূর্ব আত্মত্যাগের ঘটনারই স্মৃতিবহ। তাঁদের এ ঐতিহাসিক ঘটনা কুরআনুল কারীমে সূরা সাফফাতে বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। এরশাদ হয়েছে- ‘অতঃপর সে যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল তখন ইবরাহীম বললো, হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করছি। এখন তোমার অভিমত কি বল? সে বললো, হে আমার পিতা আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তার পুত্রকে কাত করে শায়িত করল, তখন তাকে আমি আহ্বান করলাম, হে ইবরাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে! এভাবেই আমি সৎকর্ম পরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। নিশ্চয় এটা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে মুক্ত করলাম এক কুরবানির বিনিময়ে। আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আর এইভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।' (সাফফাত, ৩৭ : ১০২-১১০ ) আল্লাহর নির্দেশে হযরত ইবরাহীম (আলাইহিস সালাতু ওয়াসাল্লাম)এর পুত্র হযরত ইসমাঈল কে কুরবানি দেওয়ার অবিস্মরণীয় ঘটনাকে প্রাণবন্ত করে রাখার জন্যই উম্মতে মুহাম্মদীর উপরও তা ওয়াজিব করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- 'সুতরাং আপনি আপনার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করুন এবং ক্ষুরবানি করুন।' (কাউসার, ১০৮ : ২) নেক আমলসমূহের মধ্যে কুরবানি একটি বিশেষ আমল। এ কারণেই রাসুলুল্লাহ সব সময় কুরবানী করেছেন এবং সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষুরবানি বর্জনকারী ব্যক্তির প্রতি তিনি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন- যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে মা আসে।' (ইবনে মাজাহ : ৩১১৪ ) কুরবানি প্রসঙ্গে একদিন সাহাবীগণ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলেন বললেন, এটা তোমাদের পিতা হযরত ইবরাহীম (আলাইহিস সালাতু ওয়াসাল্লাম) এর সাহাবীরা বললেন, এতে আমাদের কি কল্যাণ নিহিত রয়েছে? তিনি এর প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে। ৩১১৮) কুরবানির ফজিলত অর্জন করতে হলে প্রয়োজন ঐ আবেগ, অনুভূতি, আনুগত্য ও ঐকান্তিকতা যার নমুনা দেখিয়েছিলেন আল্লাহর খলীল হযরত ইবরাহীম (আলাইহিস সালাতু ওয়াসাল্লাম) । কেবল গোশত ও রক্তের নাম কুরবানি নয় বরং আল্লাহর রাহে নিজের সর্বস্ব বিলিয়ে দেওয়ার এক দৃপ্ত শপথের নাম কুরবানি। প্রকৃতপক্ষে কুরবানিদাতা কেবল পশুর গলায় ছুরি চালায় না বরং সে ছুরি চালায় সকল কু-প্রবৃত্তির। বস্তুত কুরবানির পশু, রক্ত গোশত এর কিছুই আল্লাহর নিকট পৌঁছে না, পৌঁছে শুধুমাত্র তাকওয়া। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আল্লাহর নিকট এর গোশত ও রক্ত পৌঁছে না বরং পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।' (হজ, 22: 37 )

কুরবানির বিধান

বুদ্ধিসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক, মুকীম ব্যক্তি ১০ জিলহজ ফজর হতে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যে কোনো সময় নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব। কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য যাকাতের নিসাবের মত সম্পদের এক বছর অতিবাহিত হওয়া শর্ত নয় বরং যে অবস্থায় সাদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হয় ঐ অবস্থায় কুরবানি ওয়াজিব হবে। উট, গরু, ছাগল, দুম্বা, ভেড়া ও মহিষ এই ছয় প্রকার পশু দিয়ে কুরবানি দিতে হয়। এ সমস্ত পশু ব্যতীত অন্য পশু কুরবানি করা জায়েয নেই। কুরবানির গোশত নিজে ও নিজের পরিবারবর্গ খাবে, আত্মীয়-স্বজনকে হাদিয়া দিবে এবং গরিব ও মিসকীনকে সাদাকা করবে। গোশত বিতরণের মুস্তাহাব পদ্ধতি হলো তিনভাগ করে একভাগ পরিবার পরিজনের জন্য রাখবে এবং বাকি দুইভাগের একভাগ আত্মীয়-স্বজন আর একভাগ গরিব মিসকীনদের মধ্যে বণ্টন করে দিবে

পরিশেষে

কুরবানি প্রসঙ্গে একদিন সাহাবীগণ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলেন বললেন, এটা তোমাদের পিতা হযরত ইবরাহীম (আলাইহিস সালাতু ওয়াসাল্লাম) এর সাহাবীরা বললেন, এতে আমাদের কি কল্যাণ নিহিত রয়েছে? তিনি এর প্রত্যেকটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকী রয়েছে। ৩১১৮)

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url