আখেরাত বা পরকালীন জীবনের স্তরসমূহ

পরকালীন জীবনের স্তরসমূহ

আখেরাত বা পরকালীন জীবনের স্তরসমূহ ইসলামের ধর্মীয় সংস্কৃতি ধারণার উপর নির্ভর করে তৈরি হয়ে থাকে। আখেরাত হল ইসলামিক ধর্মে মৃত্যুর পর পরকালীন সময়। ইসলামিক ধর্মে বিশ্বাস করা হয় যে এই জীবন মাত্র একটি কল্পনামূলকবা নিরব একটি পরীক্ষামূলক জীবন। আখেরাতে একটি অজানা ও সাক্ষাৎ জগত থাকে যেখানে সমস্ত মানব কর্মের ফল উপস্থিত থাকে। বিশ্বাস করা হয় যে মৃত্যুর পর একটি ন্যায্য দিব্য অদালতে আল্লাহ তাআলা মানবদেহ ও মনের সমস্ত কাজ যাচাই করেন। এই দিনটি হল বিচার দিন বা জান্নাত ও জাহান্নামের দিন।
আখেরাত বা পরকালীন জীবনের স্তরসমূহ

আখেরাত বা পরকালীন জীবন

আখেরাত এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে পরকাল। আখেরাত ঈমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আখেরাতে বিশ্বাস না করলে মানুষ ঈমানদার হতে পারে না। মুমিনদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে বলেন- ‘তারা (মুত্তাকী) আখেরাতের প্রতি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে।' (বাকারা, 2 : 8 ) আখেরাতে বিশ্বাস মানুষকে দুনিয়ার জীবনে সৎকর্মশীল করে তোলে। এর ফলে মানুষ উত্তম চরিত্র ও নৈতিকতার গুণাবলি অনুশীলন করে। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘তোমাদের ইলাহ এক, সুতরাং যারা আখেরাতে বিশ্বাস করে না তাদের অন্তর সত্যবিমুখ এবং তারা অহংকারী।' (নাহল, ১৬ : 22) পরকালীন জীবনের সফলতা ও জান্নাত লাভ করার জন্য আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। আখেরাতে বিশ্বাস স্থাপন না করলে মানুষ সত্যপথ থেকে দূরে সরে যায়, পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা আল কুরআনে বলেন- ‘কেউ আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং আখেরাতকে প্রত্যাখ্যান করলে সে তো ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়বে।' (নিসা, ৪: ১৩৬ ) মৃত্যুর সাথে সাথে মানুষের যে নতুন জীবন শুরু হয় তাই আখেরাত বা পরকাল। পরকালীন জীবনের শুরু হয় মৃত্যুর মাধ্যমে। মৃত্যু হলো পরকালের প্রবেশদ্বার। দুনিয়ার কোনো মানুষ ও প্রাণীর মৃত্যু হতে কোনো রেহাই নেই। সকলকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। এ সম্পর্কে কুরআনে এরশাদ হয়েছে- : ‘জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে।' (ইমরান, ৩ : ১৮৫) ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু তোমাদেরকে নাগালে পাবেই; এমনকি সুউচ্চ সুদৃঢ় দুর্গে অবস্থান করলেও।' (নিসা, ৪ : ৭৮)

আখেরাতের জীবনকে দুটি পর্যায়ে বিন্যাস করা হয়েছে

পবিত্র কুরআন ও হাদীসে আখেরাতের জীবনকে দুটি পর্যায়ে বিন্যাস করা হয়েছে। এক. মৃত্যু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত এবং দুই. কিয়ামত থেকে অনন্তকাল অবধি। প্রথম পর্যায়ের নাম বরযখ বা কবরের জীবন। মৃত্যুর পর থেকে পর্যন্ত সময়কে কবরের জীবন বলা হয়। কবরের জীবনে মৃত্যু ব্যক্তির সাথে কিরূপ আচরণ করা হবে এ সমন্ধে হাদীসে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

মুমিন বান্দার কবরের জীবন

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন- 'কবরে মুমিন বান্দার নিকট দুজন ফেরেশতা আসেন এবং তাকে বসান । তারপর জিজ্ঞাসা করা হয়, তোমার রব কে? সে বলে, আমার রব আল্লাহ । তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার দীন কি? সে বলে, আমার দীন ইসলাম। পুনরায় প্রশ্ন করা হয় এই ব্যক্তি যাঁকে তোমাদের নিকট প্রেরণ করা হয়েছিল, তিনি কে? উত্তরে সে বলবে, তিনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) । এরপর আসমান থেকে একজন ঘোষণাকারী এ মর্মে ঘোষণা করবেন যে, আমার বান্দা সত্য বলেছে। তাই তার জন্য জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও । তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও। এবং তার জন্য জান্নাতের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে। ফলে তার দিকে জান্নাতের স্নিগ্ধ হাওয়া এবং এর সুবাস বইতে থাকবে। তারপর তার কবরকে তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হবে ।

কাফিরের কবরের জীবন

তারপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাফিরের মৃত্যু প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, তার শরীরে তার রূহকে ফিরিয়ে আনা হয়। তারপর দুজন ফেরেশতা তার নিকটে এসে তাকে বসান এবং জিজ্ঞাসা করেন, তোমার রব কে? উত্তরে সে বলে, হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। এরপর তাঁরা জিজ্ঞাসা করেন, তোমার দীন কি? সে বলে হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। তাঁরা পুনরায় জিজ্ঞাসা করেন, এই ব্যক্তি যাঁকে তোমার নিকট প্রেরণ করা হয়েছিল, তিনি কে? উত্তরে সে বলবে, হায়! হায়! আমি কিছুই জানি না। এ অবস্থায় আসমান থেকে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেন যে, সে মিথ্যা বলছে । তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দাও। এবং তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। সুতরাং তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে। ফলে তার দিকে জাহান্নামের উত্তাপ ও লু-হাওয়া আসতে থাকবে। এরপর তার কবরকে এমন সংকীর্ণ করে দেওয়া হয় যে, তার এক দিকের পাঁজরের হাড় অপর দিকের পাঁজরের হাড়ের মধ্যে ঢুকে যায়। এরপর তার কবরে একজন ফেরেশতা মোতায়েন করা হয় যার নিকট লোহার একটি হাতুড়ি থাকে। এ হাতুড়ি দিয়ে কোনো পাহাড়ে আঘাত করা হলে তা ধুলায় মিশে যেত। এই হাতুড়ি দিয়ে ঐ ব্যক্তিকে সজোরে আঘাত করতে থাকেন, ঐ আঘাতের আওয়াজ মানুষ ও জিন ছাড়া পূর্ব হতে পশ্চিমের সমস্ত মাখলুক শুনতে পায়। হাতুড়ির আঘাতে ঐ ব্যক্তি ধূলিতে পরিণত হয়। তারপর তারমধ্যে পুনরায় রূহ ফেরত দেওয়া হয়। (এভাবে আযাব চলতে থাকে) (আবু দাউদ : ৪১২৭)

কবরের পরবর্তী ধাপ

আখেরাতের জীবনে কবরের পরবর্তী ধাপ হলো কিয়ামত। কিয়ামত দিবসের নির্দিষ্ট একটি সময় আছে। ঐ সময় যখন আসবে তখন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে ইসরাফিল শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার পর পৃথিবী মহাপ্রলয়ের মাধ্যমে ধ্বংস হয়ে যাবে। এরপর পুনরায় শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার পর সকলে জীবিত হয়ে হাশরের ময়দানে উপস্থিত হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, ফলে যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছা করেন তারা ছাড়া আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সকলে মূর্ছিত হয়ে পড়বে। তারপর আবার শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে, তখনই তারা দণ্ডায়মান হয়ে তাকাতে থাকবে। (যুমার, ৩৯ : ৬৮) কিয়ামতের ভয়াবহতা উল্লেখ করে আল্লাহ আরো বলেন- যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে, যখন নক্ষত্রমণ্ডলী বিক্ষিপ্তভাবে ঝরে পড়বে, সমুদ্র যখন উদ্বেলিত হবে এবং যখন কবর উন্মোচিত হবে, তখন প্রত্যেকে জানবে, সে কী আগে পাঠিয়েছে এবং কী পশ্চাতে রেখে গেছে।' (ইনফিতার, ৮২ : ১-৫)

পুনরুত্থান

পুনরুত্থানের পর হাশরের ময়দানে পৃথিবীর শুরু থেকে শেষের সকল মানুষ দুনিয়ার পার্থিব জীবনের হিসাব-নিকাশের জন্য এক মহাসমাবেশে মিলিত হবে। ভালো ও মন্দ কাজের পরিমাপ করা হবে। হাশরের ময়দানে মানুষের আমলনামা মাপার জন্য আল্লাহ তায়ালা যে পাল্লা প্রতিষ্ঠা করবেন তাই মিযান। মিযানে মাপার পর নেককার লোকদের ডান হাতে এবং খারাপ লোকদের বাম হাতে আমলনামা প্রদান করা হবে। সে দিন সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যখন আমলনামা উন্মোচিত হবে, যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে, জাহান্নামের আগুন যখন উদ্দীপিত করা হবে এবং জান্নাত যখন নিকটবর্তী করা হবে, তখন প্রত্যেক ব্যক্তিই জানবে সে কী নিয়ে এসেছে।' (তাকভীর, ৮১ : ১০-১৪) পরকালীন জীবনে মানুষকে বিচার করা হবে তাঁর ইহকালীন কর্ম অনুযায়ী । পৃথিবীতে যারা অধিক ভালো কাজ করেছে তারাই হবে পুরস্কৃত এবং যারা মন্দ কাজ করেছে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। নিজের সকল কৃতকর্ম সে দেখতে পাবে। ইহজীবনের সামান্য পরিমাণ ভালো বা খারাপ কাজ সে দিন গোপন রাখা হবে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘সে দিন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন দলে বাহির হবে, যাতে তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম দেখান যায়। কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে সে তাও দেখবে।' (যিলযাল, ৯৯ : ৬-৮) সে দিন মানুষকে তার কর্মের প্রতিদান দেওয়া হবে। কারো প্রতি কোনো অবিচার করা হবে না। অথচ মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার দীনকে অস্বীকার করে। অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও অশ্লীল কর্মকাণ্ড করতো। তখন তারা ভাবতো কোনো দিন তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে না। পবিত্র কুরআনে এই কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা সে দিন বলবেন- এটাই উপযুক্ত প্রতিফল। এরা কখনও হিসাবের আশংকা করত না। এবং তারা দৃঢ়তার সঙ্গে আমার নিদর্শনাবলি অস্বীকার করেছিল সব কিছুই আমি সংরক্ষণ করেছি লিখিতভাবে। অতঃপর তোমরা আস্বাদ গ্রহণ কর, আমি তো তোমাদের শাস্তিই শুধু বৃদ্ধি করবো।' (নাবা ৭৮ : ২৬-৩০)

পুলসিরাত 

হাশরের ময়দানে জাহান্নামের উপর স্থাপিত একটি অন্ধকার সূক্ষ্ম সেতু থাকবে। একে পুলসিরাত বলে। সকলকেই এ পুলসিরাত পার হতে হবে। পাপী লোকেরা তা অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না। তারা হাত-পা কেটে জাহান্নামে পতিত হবে। আর নেককার লোকেরা আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে অতি সহজে পুলসিরাত অতিক্রম করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বিচারের পর আল্লাহ তায়ালা নেককার লোকদের জান্নাত এবং বদকার লোকদের জাহান্নামে দাখিল করবেন। অতঃপর আল্লাহ তায়ালার অনুমতি নিয়ে নবী-রাসূল ও পুণ্যবান বান্দাগণ পাপী বান্দাদের জন্য আল্লাহ তায়ালার দরবারে শাফায়াত (সুপারিশ) করবেন। শাফায়াতে অনেকের পাপ ক্ষমা করা হবে এবং তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। জান্নাত ও জাহান্নাম আল্লাহ পূর্বেই সৃষ্টি করে রেখেছেন। জান্নাতের বিবরণ দিতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা তাকওয়া অবলম্বন করে চলে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তারা স্থায়ী হবে, তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঙ্গিনী এবং আল্লাহর নিকট হতে সন্তুষ্টি।' (ইমরান, ৩ : ১৫) 'মুত্তাকীদের যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হলো এতে আছে নির্মল পানির নহর, আছে দুধের নহর, যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহর, আছে পরিশোধিত মধুর নহর এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে বিবিধ ফলমূল ও তাদের প্রতিপালকের ক্ষমা।' (মুহাম্মদ, ৪৭ : ১৫)

জান্নাতের নিয়ামত

জান্নাতের নিয়ামত প্রসঙ্গে হাদীসে কুদসীতে এসেছে- ‘মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য জান্নাতে এমন নিয়ামতসমূহ প্রস্তুত করে রেখেছি যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং যা কোনো মানুষের অন্তরে কল্পনায়ও আসেনি।' (মুসলিম : ৫০৫০, তিরমিযি : ৩১২১) পরকালীন জীবনে পাপীদের শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি করা যন্ত্রণাদায়ক স্থানের নাম জাহান্নাম। জাহান্নামের শাস্তি সম্পর্কেও কুরআন-হাদীসে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। কুরআন মাজীদে এরশাদ হয়েছে— ‘যাদের পাল্লা হালকা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতি করেছে, তারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে, অগ্নি তাদের মুখমণ্ডল দগ্ধ করবে এবং সেখানে তারা থাকবে বীভৎস চেহারায়।' (মুমিনূন, ২৩ : ১০৩-১০৪) 'যারা কুফরি করে তাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আগুনের পোশাক, তাদের মাথার উপর ঢেলে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি, এর দ্বারা তাদের পেটে যা আছে তা এবং তাদের চামড়া বিগলিত করা হবে এবং তাদের জন্য থাকবে লোহার গুর্জসমূহ। যখনই তারা যন্ত্রণায় কাতর হয়ে জাহান্নাম থেকে বের হতে চাইবে তখনই তাদেরকে ফিরিয়ে দেওয়া হতে তাতে, আর তাদেরকে বলা হবে, আস্বাদ করা দহন যন্ত্রণা।' (হজ, ২২ : ১৯-২২) জাহান্নামের শাস্তি প্রসঙ্গে রাসূল বলেন-

জাহান্নামীদের আযাব

 ‘জাহান্নামীদের মধ্যে যে ব্যক্তির আযাব সবচেয়ে সহজ এবং কম হবে তার পায়ে জাহান্নামের দুটি জুতা ও ফিতা পরিয়ে দেওয়া হবে। আর এ অগ্নি জুতার তাপ এত প্রচণ্ড হবে যে, চুলার উপর হাঁড়ির পানি যেভাবে ফুটতে থাকে ঐ ভাবে তার মস্তিষ্ক ফুটতে থাকবে। তার আযাবকে সর্বাধিক কঠিন আযাব বলে ধারণা করা হবে অথচ তার আযাব হলো সবচেয়ে কম ও হালকা। (মুসলিম : ৩১৪ )

সার সংক্ষেপ

উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে এ কথা প্রতীয়মান যে, দুনিয়ার সফলতাই চূড়ান্ত সফলতা নয় বরং আখেরাতের সফলতাই চূড়ান্ত সফলতা। সুতরাং পার্থিব জীবনের শস্যক্ষেত্রে আমরা যা কিছু চাষাবাদ করব তার প্রতিফল পাওয়া যাবে আখেরাতে। তাই আসুন আমরা দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ তায়ালা সকল বিধি-বিধান অনুসরণের মাধ্যমে ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে মুক্তি, শান্তি ও সফলতা অর্জনে সচেষ্ট হই।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url