কুফর শিরক বিদয়াত নিফাক এর পরিচয় ও পরিণতি

কুফর শিরক বিদয়াত নিফাক

"কুফর" একটি আরবি শব্দ, কুফর এর মূল অর্থ হলো আল্লাহর ও তাঁর নবীদের বিশ্বাস না করা। কুফর এর পরিণতি হলো সামাজিক অস্থিরতা এবং আত্মিক দুর্বলতা। একজন মুসলমান যখন কুফরে পতিত হয়, তখন সে তার আল্লাহর প্রতি নিষ্ঠা হারানো । একজন মুসলমান যখন কুফরের পথে চলে যায়, তখন সে সত্যের পক্ষে প্রতিপক্ষ হয়ে যায়। শিরক শব্দটি আরবী এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে অংশীদার সাব্যস্ত করা, একাধিক স্রষ্টা বা উপাস্যে বিশ্বাস করা। ইসলামে শিরকের পরিণতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষতিকর। ইসলামে শিরক করলে আমাল বা প্রতিক্রিয়া স্বীকার হবে না এবং আবার আখেরাতে অনেক দুঃখ ও বিপর্যয় সম্ভব। বিদয়াত শব্দটি আরবী, এর আভিধানিক অর্থ নবসৃষ্টি, দৃষ্টান্তবিহীন উদ্ভাবন, নতুন ও অভিনব। বিদয়াত গোমরাহী, আর গোমরাহীর পরিণাম হচ্ছে জাহান্নাম। রাসূলুল্লাহ * বিদয়াতের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন- ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই দীনের মধ্যে এমন কিছু নতুন উদ্ভাবন করে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয় তবে তা প্রত্যাখ্যাত।' (বুখারী : ২৪৯৯, আবু দাউদ : ৩৯৯০) নিফাক শব্দটি আরবী, এর আভিধানিক অর্থ ভণ্ডামি, কপটতা, প্রতারণা, দ্বিমুখী নীতি ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় মুখে ঈমানের স্বীকার ও অন্তরে অবিশ্বাস করাকে নিফাক বলা হয়। তাদের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যখন তারা (মুনাফিকরা) ঈমানদারদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন তারা গোপনে তাদের শয়তানদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সাথেই আছি। আমরা শুধু তাদের সাথে ঠাট্টা-তামাশা করে থাকি।' (বাকারা, ২ : ১৪)
কুফর শিরক বিদয়াত নিফাক এর পরিচয় ও পরিণতি

কুফর এর পরিচয় ও পরিণতি

কুফর শব্দটি আরবী, এর আভিধানিক অর্থ অস্বীকার করা, অবিশ্বাস করা, ঢেকে রাখা, গোপন করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, অবাধ্য হওয়া ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালার মনোনীত দীন ইসলামের মৌলিক ও প্রমাণিত বিষয়গুলোর কোনো একটিরও প্রতি অবিশ্বাস করাকে কুফর বলা হয়। কুফর হলো ঈমানের বিপরীত। ইসলামের মৌলিক ও প্রমাণিত বিষয়গুলোতে বিশ্বাসের নাম ঈমান আর এসব বিষয়ে অবিশ্বাস করা হলো কুফর। কেউ কুফরের দিকে গেলে সে ঈমানের নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। রাসুল্লাহ বলেন- 'তিনটি জিনিস এমন যার মধ্যে সেগুলো পাওয়া যাবে, সে ঈমানের স্বাদ পাবে। আল্লাহ ও তার রাসূল তার কাছে অন্য সবকিছু থেকে প্রিয় হবে। কাউকে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে। জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে যেভাবে অপছন্দ করে, তেমনি পুনরায় কুফরির দিকে প্রত্যাবর্তন করাকে অপছন্দ করবে।' (বুখারী: ১৫, বায়হাকী ১৫৭৬) যে ব্যক্তি কুফরে লিপ্ত হয় তাকে বলা হয় কাফির। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি ইসলামের মৌলিক ও প্রমাণিত বিষয়সমূহ অবিশ্বাস করে তখন তাকে কাফির বলা হয়। কাফির অর্থ অবিশ্বাসী, অস্বীকারকারী। যারা কুফরি করে তাগুত হচ্ছে তাদের অভিভাবক। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা ঈমান আনে আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার হতে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান। আর যারা কুফরি করে তাগুত তাদের অভিভাবক। তারা তাদেরকে আলো হতে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই দোযখের অধিবাসী, সেখানেই তারা চিরকাল থাকবে।' (বাকারা, ২ : ২৫৭ ) মানবজীবনে কুফরের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। কুফরের ফলে দুনিয়াতে শুধু নয় বরং আখেরাতেও মানুষকে শোচনীয় পরিণতি বরণ করতে হবে। কুফর মানুষের মধ্যে অবাধ্যতা ও অকৃতজ্ঞতার জন্ম দেয়, হতাশা এনে দেয়, সমাজে অনৈতিকতার প্রসার ঘটায়, পাপাচার বৃদ্ধি করে সর্বোপরি আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টি এনে দেয়। আর পরকালে কাফিরদের জন্য অপেক্ষা করছে জাহান্নামের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি, তারা জাহান্নামে থাকবে চিরকাল। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যারা কুফরি করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করবে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।' (বাকারা, ২:৩৯ ) কুফর একটি মারাত্মক পাপ, আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টি থেকে মুক্ত থাকতে ও জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে কুফর হয়ে যায় এমন কাজ সকলেরই পরিহার করা উচিত।

শিরক এর পরিচয় ও পরিণতি

শিরক শব্দটি আরবী এর বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে অংশীদার সাব্যস্ত করা, একাধিক স্রষ্টা বা উপাস্যে বিশ্বাস করা। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার জাত ও সত্তা, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা, ইবাদত ও আনুগত্য এবং নাম ও গুণাবলি থেকে যেকোন একটির সাথে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে শরিক করা কিংবা তার সমতুল্য মনে করাকে শিরক বলা হয়। যে ব্যক্তি শিরক করে তাকে বলা হয় মুশরিক। শিরক তাওহীদের বিপরীত। শিরক অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। পৃথিবীর সকল প্রকার জুলুমের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো শিরক। আল্লাহ তায়ালা বলেন- 'স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশ দিয়ে তাঁর পুত্রকে বলেছিল, হে বৎস, আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করো না। নিশ্চয়ই শিরক চরম যুলুম। (লুকমান, ৩১ : ১৩) বস্তুত আল্লাহ তায়ালাই আমাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক। তাঁর প্রদত্ত অসংখ্য নিয়ামত আমরা ভোগ করে থাকি। এরপরও কেউ যদি আল্লাহ তায়ালার সাথে কাউকে অংশীদার স্থাপন করে তবে তা অপেক্ষা বড় যুলুম আর কী হতে পারে? আল্লাহ তায়ালা মুশরিকদের প্রতি খুবই অসন্তুষ্ট। তিনি অপার ক্ষমাশীল ও অসীম দয়াময় হওয়া সত্ত্বেও শিরকের অপরাধ ক্ষমা করেন না । আল্লাহ তায়ালা বলেন- “নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তাঁর সঙ্গে শরিক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এটা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যে কেউ আল্লাহর শরিক করে সে এক মহাপাপ করে।' (নিসা, ৪ : ৪৮) পরকালে মুশরিকদের জন্য জান্নাত হারাম ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে মর্মে উল্লেখ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন- 'কেউ আল্লাহর শরিক করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত অবশ্যই নিষিদ্ধ করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। যালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।' (মায়িদা, ৫ : 92 ) আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করা এবং তাঁর সাথে কাউকে শরিক না করা বান্দার উপর আল্লাহর অধিকারসমূহের অন্যতম। রাসূলুল্লাহ বলেন- "নিশ্চয়ই বান্দার উপর আল্লাহ তায়ালার হক হলো বান্দা তাঁর ইবাদত করবে এবং তার সাথে কাউকে শরিক করবে না।' (বুখারী : ২৬৪৪, মুসলিম : ৪৩) আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরক করার অর্থই হচ্ছে তাঁর প্রভুত্বকে অস্বীকার করা। আর যে ব্যক্তি তার প্রভুকে অস্বীকার করবে তার সাথে তার প্রভুরও সম্পর্ক থাকার কথা নয়। হাদীসে কুদসীতে এসেছে- “আল্লাহ তায়ালা বলেন আমি মুশরিকদের শিরক থেকে পবিত্র। যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল করল যাতে আমাকে ছাড়া আর কাউকেও শরিক করা হয়েছে, আমি তার সাথে এবং তার শিরকের সাথে সম্পর্কহীন।' (মুসলিম : (৫৩০০ ) শিরক সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে রাসূলুল্লাহ বলেন- “যদি তোমাকে হত্যা করা হয় বা জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তারপরও আল্লাহর সাথে তুমি কাউকে শরিক করবে না। (ইবনে মাজাহ : 4028 ) প্রকৃতপক্ষে শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এরূপ কাজ থেকে সকলেরই সদাসর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। আমরা অবশ্যই শিরক থেকে বেঁচে থাকব এবং আল্লাহ তায়ালার উপর সুদৃঢ় ঈমান এনে তাঁর প্রিয়পাত্র হব। তাহলেই আমাদের ইহকাল ও পরকাল মঙ্গলময় হবে।

বিদয়াত এর পরিচয় ও পরিণতি

বিদয়াত শব্দটি আরবী, এর আভিধানিক অর্থ নবসৃষ্টি, দৃষ্টান্তবিহীন উদ্ভাবন, নতুন ও অভিনব। পরিভাষায়, আকিদা ও আমলের সে সকল আবিষ্কৃত পন্থাকে বিদয়াত বলা হয় যা রাসূলুল্লাহ ও খুলাফায়ে রাশেদীনের কোনো দৃষ্টান্ত ছাড়াই ইবাদতের অংশ বা পুণ্য মনে করে নতুনভাবে উদ্ভাবন ও প্রচলন করা হয়েছে । বিদয়াত গোমরাহী, আর গোমরাহীর পরিণাম হচ্ছে জাহান্নাম। রাসূলুল্লাহ * বিদয়াতের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন- ‘যে ব্যক্তি আমাদের এই দীনের মধ্যে এমন কিছু নতুন উদ্ভাবন করে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয় তবে তা প্রত্যাখ্যাত।' (বুখারী : ২৪৯৯, আবু দাউদ : ৩৯৯০) আলো ও অন্ধকারের মধ্যে যেমন বৈপরীত্য তেমনিভাবে সুন্নত ও বিদয়াতের মাঝেও অনুরূপ বৈপরীত্য রয়েছে। এ কারণে বিদয়াত যে পরিমাণ বাড়তে থাকে সুন্নতও সে পরিমাণে সমাজ থেকে বিলুপ্ত হতে থাকে। রাসূলুল্লাহ বলেন- 'কোনো জাতি যখনই কোনো বিদয়াতের উদ্ভাবন করে তখন ঐ পরিমাণ সুন্নত অন্তর্হিত হয়ে যায়। সুতরাং কোনো বিদয়াত উদ্ভাবন না করে সুন্নত আঁকড়ে ধরে থাকার মধ্যেই কল্যাণ নিহিত রয়েছে।' (মুসনাদে আহমাদ : ১৬৩৫৬) বিদয়াতের ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন- 'নিশ্চয়ই সত্যবাণী হলো আল্লাহর কিতাব, উত্তম পথনির্দেশিকা হলো মুহাম্মদের পথনির্দেশিকা এবং নিকৃষ্ট কাজ হচ্ছে ঐ পথের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করা, প্রত্যেক নতুন কিছু সৃষ্টি করাই হচ্ছে বিদয়াত আর প্রত্যেক বিদয়াতই হচ্ছে গোমরাহী এবং প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।' (নাসাঈ : ১৫৬০, তবারানি : ৮৪৪১ ) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেন- 'যে ব্যক্তি কোনো বিদয়াতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করল সে ইসলাম ধ্বংস করার কাজে সাহায্য করল।' (বায়হাকী ৯১৪৪ ) মু বিদয়াত থেকে মুক্ত থাকতে আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা ও রাসূল হযরত এর অনুসরণ ও অনুকরণ করাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ উপায় । ফেमনা রাসুলুল্লাহ এর জীবনই হলো উম্মতের জন্য উত্তম আদর্শ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন- 'তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য তো রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।' (আহযাব, ৩৩ : ২১) বিদয়াতের ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ এর কঠোর হুঁশিয়ারি থাকার কারণে সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈনগণ সকলেই বিদয়াত এবং এবং কুসংস্কারের কঠোর মুকাবিলা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিদয়াত সম্পর্কে সতর্ক হয়ে আমাদের রাসূলুল্লাহ এর সুন্নত পালনের প্রতি বেশি যত্নশীল হতে হবে।

নিফাক বা দ্বিমুখীতা এর পরিচয় ও পরিণতি

নিফাক শব্দটি আরবী, এর আভিধানিক অর্থ ভণ্ডামি, কপটতা, প্রতারণা, দ্বিমুখী নীতি ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় মুখে ঈমানের স্বীকার ও অন্তরে অবিশ্বাস করাকে নিফাক বলা হয়। যে ব্যক্তি এরূপ করে তাকে বলা হয় মুনাফিক। মুনাফিকরা সাধারণত সামাজিক ও পার্থিব লাভের জন্য এরূপ করে থাকে। তারা মুসলমান ও কাফির উভয় দলের সাথেই থাকে। প্রকাশ্যে তারা নিজেদের মুসলমান বলে দাবি করে। কিন্তু গোপনে তারা ইসলামকে অস্বীকার করে। তাদের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যখন তারা (মুনাফিকরা) ঈমানদারদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। আর যখন তারা গোপনে তাদের শয়তানদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সাথেই আছি। আমরা শুধু তাদের সাথে ঠাট্টা-তামাশা করে থাকি।' (বাকারা, ২ : ১৪) এক কথায় অন্তরে কুফর রেখে মুখে মুখে ঈমানের কথা প্রকাশকে নিফাক বলে। আর এরূপ প্রকাশকারী হলো মুনাফিক। নিফাক হলো নৈতিকতা ও মানবিকতার আদর্শের বিপরীত কাজ। মুনাফিকদের চরিত্র দেখলে আমরা এ সত্য জানতে পাই। তারা সব ধরনের অন্যায় ও মন্দ কাজ করে থাকে । উত্তম আচরণ ও উত্তম চরিত্র তারা কখনোই অনুশীলন করে না বরং মিথ্যা ও প্রতারণাই তাদের প্রধান কাজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী।' (মুনাফিকুন, ৬৩ : ১) মুনাফিকদের চরিত্র বিষয়ে রাসূলুল্লাহ এর অসংখ্য হাদীস রয়েছে, তেমনি একটি হাদীস- ‘মুনাফিকদের তিনটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে, যখন প্রতিশ্রুতি প্রদান করে, তা ভঙ্গ করে, যখন তাদের কাছে আমানত গচ্ছিত রাখা হয় তারা তার খেয়ানত করে।' (বুখারী : ৩২, মুসলিম : ৮৯) নিফাক জঘন্যতম পাপ। এটা মানুষের চরিত্র ধ্বংস করে ফেলে। নিফাকের ফলে মানুষ অন্যায় ও অশ্লীল কাজে অভ্যস্ত হয়ে যায়, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ বিনষ্ট হয়। নিফাকের দ্বারা মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহের প্রসার ঘটে, সমাজে মারামারি, হানাহানি ও অশান্তির সৃষ্টি হয়। এসব কারণে দুনিয়াতে মুনাফিকরা ঘৃণিত ও নিন্দিত হয়। আখেরাতেও তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব । আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের স্থান জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে, তারা তাদের কোনো সাহায্যকারী পাবে না।' (নিসা, ৪ : ১৪৫)

পরিশেষে

‘যারা কুফরি করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে অস্বীকার করবে তারাই জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।' (বাকারা, ২:৩৯ ) কুফর একটি মারাত্মক পাপ, আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টি থেকে মুক্ত থাকতে ও জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে কুফর হয়ে যায় এমন কাজ সকলেরই পরিহার করা উচিত। আমরা সকলেই নিফাক থেকে বেঁচে থাকব। হাদীসে যে সব কাজ মুনাফিকের নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে আমরা সেগুলো বর্জন করব। খাঁটি মুমিন হিসেবে জীবনযাপনের চেষ্টা করব। বিদয়াতের ভয়াবহ পরিণতির ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ এর কঠোর হুঁশিয়ারি থাকার কারণে সাহাবায়ে কিরাম, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈনগণ সকলেই বিদয়াত এবং এবং কুসংস্কারের কঠোর মুকাবিলা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে শিরক ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এরূপ কাজ থেকে সকলেরই সদাসর্বদা সতর্ক থাকতে হবে। আমরা অবশ্যই শিরক থেকে বেঁচে থাকব এবং আল্লাহ তায়ালার উপর সুদৃঢ় ঈমান এনে তাঁর প্রিয়পাত্র হব। তাহলেই আমাদের ইহকাল ও পরকাল মঙ্গলময় হবে।

Next Post Previous Post
2 Comments
  • Maruf
    Maruf ১ মে, ২০২৩ এ ১২:১৫ PM

    Thank

    • নামহীন
      নামহীন ১৭ মে, ২০২৩ এ ১০:০২ AM

      well come

Add Comment
comment url