মানুষের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত সমূহ

মানুষের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত

ইসলামে বিশ্বাসী মুসলিমদের মধ্যে একটি প্রধান বিশ্বাস হল আল্লাহর সমস্ত নিয়ামত ও করুণার প্রতি সমর্পণ। কুরআন ও হাদিস এবং ইসলামী সাহিত্যে বর্ণিত হয়েছে মানুষের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত সমূহ।কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামত সমূহ হল: জীবনের নিরাপত্তা ও সুস্থতার জন্য পানি ও খাদ্য নিয়মিত উপস্থাপন করা হয়েছে।মানুষের জীবনের কার্যকলাপ এবং সমস্ত প্রকার সংসারদুঃখ থেকে রক্ষার জন্য নিদ্রা প্রয়োজন।বন্ধুত্ব, পরিবার এবং সম্পদ সংক্রমণ এবং অপরকর্মীদের সম্পর্ক নিয়মিত উপস্থাপন করা হয়েছে।সামাজিক ন্যায় ও ন্যায়বিচারের জন্য সমস্ত মানুষের বিচার করা উচিত।আল্লাহর আদেশ মেনে চলা এবং আল্লাহর রাসূলের সুন্নত অনুসরন করা । আল্লাহ তাআলা মানুষকে বুদ্ধি ও বিবেক দিয়েছেন যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারেন। আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুই কান দিয়েছেন যাতে তারা শ্রবণ করতে পারেন। আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুটি চোখ দিয়েছেন যাতে তারা দেখতে পারেন।

মানুষের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত সমূহ

আল্লাহর নিয়ামত সমূহ

আল্লাহ খাদ্য দ্রব্যে মানুষের দেহ পুষ্ট করার গুণ দান করেছেন। আল্লাহ মধুসহ বিভিন্ন দ্রব্যে রোগ নিরাময়ের গুণ দান করেছেন । 1) আল্লাহ নূর থেকে ফেরেশতাদের সৃষ্টি করেছেন। 2) আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে তাঁর অবাধ্যতা করার ক্ষমতা দেননি । ফেরেশতারা আল্লাহর বিশ্বস্ত অনুগত কর্মচারী। 3) আল্লাহ আগুন থেকে জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। 4) আল্লাহ জিনদেরকে তাঁর আনুগত্য করার কিংবা অবাধ্যতা করার ক্ষমতা দিয়েছেন ৷ 5) আল্লাহ মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। 6) আল্লাহ মানুষদেরকে তাঁর আনুগত্য করার কিংবা অবাধ্যতা করার ক্ষমতা দিয়েছেন। 7) আল্লাহ জিন ও মানুষদেরকে তাঁর আনুগত্য করার পুরস্কার ও অবাধ্যতা করার শাস্তি সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন । 8) আল্লাহ মানুষ, বিভিন্ন প্রাণী, উদ্ভিদ ও বিদ্যুৎ কণা ইত্যাদির জুড়ি সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ প্রথম মানুষ আদম (আ) ও তাঁর স্ত্রী হাওয়া (রা) থেকে মানুষের বংশধারা চালু করেছেন। 9) আল্লাহ মানুষকে পুরুষ ও নারী রূপে সৃষ্টি করেছেন যাতে তারা পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পরম প্রশান্তি লাভ করতে পারে এবং সমাজ- সভ্যতা-সংস্কৃতির আসল দুর্গ পরিবার সংগঠন গড়ে তুলতে পারে। 10) আল্লাহ পুরুষকে দুর্ধর্ষতা, সাহসিকতা, ক্ষিপ্রতা ও কঠোরতার আধিক্য দান করেছেন। 11) আল্লাহ নারীকে নম্রতা, মায়া-মমতা ও সৌন্দর্যানুভূতির আধিক্য দান করেছেন। 12) আল্লাহ নির্দিষ্ট সংখ্যায় মানুষ ও নির্দিষ্ট পরিমাণে সম্পদ সৃষ্টি করে থাকেন। 13) আল্লাহ সকল মানুষ ও অন্যান্য সকল প্রাণীর রিজিকের ব্যবস্থা করে থাকেন। 14) আল্লাহ মানুষকে অভাবের আশংকায় সন্তান হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। 15) আল্লাহ মানুষের প্রয়োজন মেটানোর জন্য যা যা প্রয়োজন সবই সৃষ্টি করেছেন। 16) আল্লাহ পৃথিবীর সম্পদ-সম্ভার মানুষের ভোগ-ব্যবহারের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। 17) আল্লাহর সৃষ্ট নিয়ামাতগুলো গণনা করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। 18) আল্লাহ কাউকে বেশি অর্থ-সম্পদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। 19) আল্লাহ কাউকে কম অর্থ-সম্পদ দিয়ে পরীক্ষা করেন। 20) আল্লাহই মানুষের আকৃতি, গায়ের রঙ, ভাষা, কণ্ঠস্বর, চলনভংগি ইত্যাদির পার্থক্য সৃষ্টি করেছেন । 21) আল্লাহ জীবকুলের মধ্যে মানুষকে সবচে' বেশি জ্ঞান দান করেছেন। তবে জ্ঞানময় আল্লাহর জ্ঞানের তুলনায় এই জ্ঞান খুবই সামান্য । 22) আল্লাহ মানুষকে রূহ দান করেছেন। আল্লাহ যদ্দিন রূহকে মানুষের মাঝে অবস্থান করতে দেন তদ্দিনই মানুষ জীবিত থাকে । 23) আল্লাহ মানুষকে মস্তিষ্ক দান করেছেন। 24) আল্লাহ এটিকে চিন্তা-ভাবনা করা, পঞ্চেন্দ্রিয়লব্ধ অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করা, বিভিন্ন বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করা ও বহু কিছু উদ্ভাবন করার যোগ্যতা দান করেছেন। 25) আল্লাহ মানুষকে হৃদপিণ্ড দান করেছেন। 26) আল্লাহর নির্দেশে এটি ছন্দবদ্ধভাবে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে দেহের সর্বত্র রক্ত-সঞ্চালনের কর্তব্য পালন করে। আল্লাহ মানুষকে ফুসফুস দান করেছেন । 27) আল্লাহর নির্দেশে এটি ছন্দময় প্রক্রিয়ায় রক্তে অক্সিজেন ঢুকানো ও রক্ত থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড সরানোর কর্তব্য পালন করে। 28) আল্লাহ মানুষকে একজোড়া কিডনি দান করেছেন। এরা পানিকে পরিস্রুত করে রক্ত-রসে পরিণত করা ও অ-প্রয়োজনীয় পানিকে বের করে দেয়ার কর্তব্য পালন করে। 29) আল্লাহ মানুষকে পাকস্থলি দান করেছেন।এটি আহার্য দ্রব্য হজম করে দেহ পরিপোষণের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে । 30) আল্লাহ যকৃত (লিভার) দান করেছেন। এটি পিত্ত ক্ষরণ করে পিত্তথলিতে জমা রাখে ও বিশেষ বিশেষ খাদ্যকে পরিপাকের পর রক্ত স্রোতে পাঠানোর কর্তব্য পালন করে।আল্লাহ গোটা দেহে বহু সংখ্যক হাড়, পেশী, কোষ, কলা, অস্ত্র, ঝিল্লি, গ্ৰন্থি ইত্যাদি দান করেছেন যেইগুলো দেহকে সজীব, সুস্থ, সবল রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মে বায়ু পাখিদেরকে উড়তে ও মানুষকে প্লেনে চড়ে দ্রুত দেশ-বিদেশে পৌঁছতে সাহায্য করে । 31) আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মে নদ-নদী ও সাগর-মহাসাগরের পানি জাহাজগুলোকে ভাসিয়ে রাখে যাতে মানুষ দূর দূর স্থানে পৌঁছতে ও মালসামগ্রী আমদানী-রফতানী করতে পারে । 32) আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত নিয়মে বাষ্প বিভিন্ন মেশিনে শক্তি সঞ্চালন করে যাতে বিভিন্ন যানে চড়ে মানুষ দ্রুত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে পারে । আল্লাহ মানুষকে চিন্তাশক্তি দান করেছেন। আল্লাহ মানুষকে দেখার শক্তি দান করেছেন। আল্লাহ মানুষকে লেখার শক্তি দান করেছেন। আল্লাহ মানুষকে কথা বলার শক্তি দান করেছেন। 33) আল্লাহ মানুষকে শুনার শক্তি দান করেছেন । আল্লাহ মানুষকে ধরার শক্তি দান করেছেন । আল্লাহ মানুষকে চলার শক্তি দান করেছেন। 34) আল্লাহ মানুষকে বংশবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদনের শক্তি দান করেছেন। 35) আল্লাহ মানুষকে ইচ্ছা ও কর্ম-প্রচেষ্টার স্বাধীনতা দান করেছেন। আল্লাহ মানুষকে অসংখ্য সৃষ্টির ওপর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা দান করেছেন। 36) আল্লাহ মানুষকে তাঁর ইবাদাতের (উপাসনা-দাসত্ব-আদেশানুবর্তিতার) জন্য সৃষ্টি করেছেন । 37) আল্লাহ একমাত্র মানুষকেই তাঁর খালীফা বা প্রতিনিধি হিসেবে পৃথিবীতে খিলাফাত (আল্লাহর প্রতিনিধিত্বশীল শাসন) কায়েম করে পূর্ণাংগ ইবাদাতের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির দায়িত্ব দিয়েছেন। আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান ইসলাম । 38) আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান নির্ভুল, পূর্ণাংগ, ভারসাম্যপূর্ণ ও কল্যাণময় । আল্লাহ ছাড়া আর কারো পক্ষে এমন জীবন বিধান রচনা করা সম্ভব নয় । আল্লাহ নবী-রাসূলদের মাধ্যমে ইসলামের শিক্ষা মানুষের নিকট পেশ করেছেন। আল্লাহ প্রথম মানুষ আদমকে (আ) প্রথম নবী বানিয়েছেন। 39) আল্লাহ যুগে যুগে বহু নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন যাতে তাঁরা মানুষকে আল্লাহর ইবাদাত (উপাসনা-দাসত্ব-আদেশানুবর্তিতা) এবং তাগুতের (আল্লাহদ্রোহী শক্তির) বিরোধিতা করার শিক্ষা দেন। 40) আল্লাহ সর্বশেষে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি সর্বশেষ আসমানী কিতাব আলকুরআন নাযিল করেছেন। আল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহকে (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলকুরআনের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। 41) আল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহকে (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলকুরআনের প্রায়োগিক রূপ শিক্ষা দেবার দায়িত্ব দিয়েছেন। আল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুসরণকে তাঁর ভালোবাসা পাওয়ার শর্ত বানিয়েছেন। আল্লাহ মানুষকে খালীফার (প্রতিনিধির) মর্যাদা দেয়ায় হিংসা-কাতর ইবলীস ।

পরিশেষে

মানুষের প্রতি আল্লাহর নিয়ামত সমূহ গুনে শেষ করা যাবে না। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর নিয়ামত সমূহের শুকরিয়া আদায় করা।

Next Post Previous Post
1 Comments
  • নামহীন
    নামহীন ৫ ডিসেম্বর, ২০২২ এ ৩:১৯ PM

    very nice

Add Comment
comment url